বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন ২০২৫
Thursday , 19 June 2025
৬ আষাঢ় ১৪৩২
২২ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৯ জুন ২০২৫

কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি: ট্রাম্প

কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি: ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অবস্থান নিয়ে আবারও ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছেন। ছয় দিন ধরে চলা তীব্র বোমা হামলার মধ্যে তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

হোয়াইট হাউস লনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আপনারা জানেন না আমি করব, কি করব না। আমি করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউই জানে না আমি কী করব।” তিনি আরও বলেন, “ইরানের বড় ধরনের সমস্যা আছে, আর তারা এখন আলোচনা চায়।”

জুভেন্টাস ফুটবল দলের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে ছবি তোলার সময় ট্রাম্প বলেন, “আমি সাধারণত সিদ্ধান্ত নিই শেষ মুহূর্তে। কারণ যুদ্ধ পরিস্থিতি সবসময় পরিবর্তনশীল।”

এই ধরনের অস্পষ্টতা কেবল আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বিতর্ক তৈরি করেছে। কিছু রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সাংসদ ট্রাম্পের ক্ষমতা সীমিত করতে আইন প্রস্তাব করছেন।

ওভাল অফিসে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি যুদ্ধ চাই না। তবে যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে যুদ্ধ না করলে তারা পরমাণু অস্ত্র পাবে — তখন কিছু একটা করতেই হবে।”

প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ কংগ্রেসে বলেছেন, “আমাদের কাজ প্রস্তুত থাকা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথার গুরুত্ব আছে এবং আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই আছি।”

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইরান যদি পরমাণু অস্ত্র পায়, পুরো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।” যদিও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড আগে জানিয়েছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে না। পরে অবশ্য তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অবস্থান মিলিয়ে নেন।

ইসরায়েল তাদের প্রথম হামলার কারণ হিসেবে ইরানের পরমাণু অস্ত্রের আশঙ্কাকেই দেখিয়েছে। উল্লেখ্য, ইসরায়েলের নিজস্ব পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়, যদিও দেশটি তা কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।

১৩ জুন ইসরায়েলের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনা স্থগিত হয়ে গেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, “তারা সময় থাকতে আলোচনায় বসেনি। এখন খুব দেরি হয়ে গেছে।”

তিনি জানান, ইরান আলোচনার আগ্রহ দেখালেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “এক সপ্তাহ আগেও যেটা সম্ভব ছিল, এখন আর সেটা নেই।”

ট্রাম্প স্পষ্ট করেন, তিনি শুধু যুদ্ধবিরতির পক্ষে নন, চান “সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত বিজয়”। তিনি বলেন, “বিজয় মানে হলো, ইরানের কোনো পরমাণু অস্ত্র থাকবে না।”

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচি সিএনএনকে বলেন, “আমরা কারও কাছে হাত পাতছি না। আমরা আত্মরক্ষা করছি।”

তিনি আরও বলেন, “যদি আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়, তবে আমাদের হাত বাঁধা থাকবে না। যা প্রয়োজন, আমরা তাই করব।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সতর্ক করে দিয়েছেন, “যুক্তরাষ্ট্র জড়ালে তার ভয়াবহ পরিণতি হবে।”

ট্রাম্প বারবার বলেছেন, “অবস্থা বড় কিছু ঘটার দিকে যাচ্ছে।” তবে ঠিক কী ঘটবে তা জানাননি। এদিকে ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪০ জনে, যার মধ্যে ৭০ জন নারী ও শিশু রয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়