বিজ্ঞানীদের হত্যা করে কি থামানো যাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি?

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির পিছনে থাকা শীর্ষ বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, গত ১৩ জুনের পর থেকে অন্তত ১৪ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। তেল আবিবের বিশ্বাস, এসব হত্যাকাণ্ড ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, এটি কর্মসূচিকে হয়তো কিছুটা পিছিয়ে দেবে, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে পারবে না।
ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জোশুয়া জারকা এপিকে জানান, বিজ্ঞানী হত্যা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথকে ‘প্রায় অসম্ভব’ করে তুলবে। তার মতে, বিজ্ঞানীদের পুরো দল নিশ্চিহ্ন হওয়া মানে প্রকল্পটি কয়েক বছর পিছিয়ে যাওয়া। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ১৩ জুনের প্রথম হামলাতেই রসায়ন, ধাতুবিদ্যা ও পদার্থবিজ্ঞানের ৯ বিশেষজ্ঞ নিহত হন। পরদিন ইরানি টিভি জানায়, ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া বিজ্ঞানী মোহাম্মদ রেজা সিদিঘি সাবেরকেও হত্যা করা হয়েছে।
তবে পরমাণু বিশ্লেষকদের ধারণা ভিন্ন। তারা বলছেন, ইরানে এখনও পর্যাপ্ত বিকল্প বিজ্ঞানী রয়েছেন, যারা নিহতদের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর মতে, সামরিক উপায়ে ইরানের অর্জিত জ্ঞান পুরোপুরি ধ্বংস করা অসম্ভব। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি স্পষ্ট বলেন, হামলা ইরানের দশকের পর দশকে অর্জিত জ্ঞান ও সক্ষমতা মুছে ফেলতে পারবে না। বিশেষজ্ঞ মার্ক ফিটজপ্যাট্রিকের মতে, মানুষ হত্যা বা স্থাপনা ধ্বংস করে কর্মসূচি স্থায়ীভাবে থামানো যাবে না, শুধু দেরি করানো যাবে। প্রকল্পের নকশা রয়ে যাবে এবং নতুন গবেষকরা তা বুঝে নেবেন।
অতীতেও ইরানি বিজ্ঞানী হত্যায় ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালে মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যার দায়ও তারা নেয়। ফ্রান্সের লোভা রিনেলের মতে, এসব হত্যা কর্মসূচি বিলম্বিত করেছে, কিন্তু থামাতে পারেনি।