বিশ্বকে বদলাতে ট্রাম্পের ‘পাগল তত্ত্ব’ কীভাবে কাজ করছে?

বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবির্ভাব যেন এক নতুন ধারা তৈরি করেছে। তার সিদ্ধান্ত, কথাবার্তা কিংবা আচরণ—সব কিছুতেই রয়েছে অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা আর ধোঁয়াশা। কখন কী করবেন, সেটা আগাম বলা প্রায় অসম্ভব। আর এটাই ট্রাম্পের মূল শক্তি। তিনি নিজেকে বিশ্বের কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন, যেন তিনি এক 'অপ্রতিরোধ্য এবং খামখেয়ালি' নেতা। রাজনীতিতে এই কৌশলকে বলা হয় ‘পাগল তত্ত্ব’ বা ‘ম্যাডম্যান থিওরি’।
ট্রাম্প কীভাবে ‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করছেন?
ট্রাম্প কখনো মিত্রদের আক্রমণ করেন, কখনো আবার প্রতিপক্ষকে প্রশ্রয় দেন। তিনি প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দেন, যে কোনো মুহূর্তে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যেমন, তিনি একবার বলেছিলেন, ‘আমি ইরানে আক্রমণ করতে পারি, আবার নাও করতে পারি—কেউ জানে না আমি কী করব।’ এই ধরনের অস্পষ্ট মন্তব্য প্রতিপক্ষের মধ্যে ভয় তৈরি করে।
তার সময়কালে কানাডার মতো মিত্র দেশকে অপমান করেছেন, ন্যাটোর নিরাপত্তা চুক্তির ওপর প্রশ্ন তুলেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে ‘ফ্রিলোডার’ আখ্যা দিয়েছেন। আবার একই সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা দেখিয়েছেন। তার এই নীতির মাধ্যমে ন্যাটোর দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই কৌশল ইচ্ছাকৃত। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোভিট্জ মনে করেন, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি পুরোপুরি তার ব্যক্তিগত মেজাজ ও খামখেয়ালির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক দরকষাকষির অভিজ্ঞতা থেকেই এই খেলা শিখেছেন।’
তবে বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ সতর্ক করেছেন, এই কৌশল সব সময় কাজ নাও করতে পারে। যেমন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ট্রাম্পের হুমকিকে গুরুত্ব দেননি। ইরানও ট্রাম্পের চাপের পর পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।